ব্যথা
অল্প অল্প কোমর ব্যথা থেকেই তীব্র সায়াটিকার উৎপত্তি। কোমর ব্যথা পায়ের দিকে চলে গেলে তাকে সায়াটিকা বলে। কোমরের হাড় ক্ষয় বা চাকতি সরে যাওয়ায় (পিএলআইডি) জটিলতা থেকে সাধারণত সায়াটিকা হয়।
অর্থাৎ সায়াটিক স্নায়ুর গোড়াগুলো দীর্ঘদিন চাপে পড়ে থাকলে এই বৃহৎ স্নায়ুটিতে যে প্রদাহ সৃষ্টি হয় সেটিই সায়াটিকা। এই রোগে রোগী মাঝারি থেকে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। দাঁড়িয়ে থাকলে বা হাঁটলে ব্যথা তীব্রতর হয়। অনেকে শুয়েও থাকতে পারেন না। আরাম পাওয়ার জন্য রোগী এপাশ-ওপাশ ছটফট করতে থাকেন, কিন্তু কোনো পজিশনেই আরাম বোধ করেন না। রোগী যদি আগে থেকেই ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে কষ্ট আরও বেড়ে যায়।
ব্যথা ঘুম কেড়ে নেয়। ব্যথার ওষুধও কাজ করে না। অনেকে কোমরে কোনো ব্যথাই অনুভব করেন না, ব্যথা নিতম্ব থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত চলে যায়। অনেকে বলেন, পা চাবাচ্ছে বা ঝি ঝি ধরে আছে। অনেকে পায়ের গোড়ালি, পাতা বা আঙুলে বোধ পান না বা অবশ হয়েছে মনে করেন। পায়ে স্যান্ডেল ধরে রাখতে পারছেন না বা পা মেঝেতে আছে কিনা বুঝতে পারছেন না- এমনও অভিযোগ পাওয়া যায় রোগীদের কাছ থেকে। এ ধরনের রোগীকে আইপিএম বা সমন্বিত চিকিৎসা করতে হয়। পূর্ণ বিশ্রাম এ রোগের প্রধান চিকিৎসা। প্রয়োজনমতো দিনে তিন-চারবার ইলেক্ট্রোথেরাপি প্রয়োগ করা যেতে পারে, ফলে রোগী তীব্র ব্যথা থেকে মুক্তি পাবেন।
সাবধানতার সঙ্গে ব্যথার ওষুধ প্রয়োগ করা উচিত, কারণ ব্যথার ওষুধ পাকস্থলির প্রদাহ, ডায়াবেটিস রোগী বা কিডনি রোগীদের ক্ষেত্রে মারাÍক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করতে পারে।
তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত সায়াটিক নার্ভ স্ট্রেচিং, থেরাপিউটিক এক্সারসাইজ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই দ্রুত সায়াটিকার ব্যথা কমাতে পারে। তবে এক্ষেত্রে রোগীকে অবশ্যই একজন দক্ষ বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিতে হবে।
সায়াটিকার ব্যথা তীব্র আকার ধারণ করার আগেই এর চিকিৎসা শুরু করা জরুরি। কারণ ব্যথা ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি হলে বা তীব্রতর হলে সেই ব্যথা সারতে দীর্ঘ সময় লাগে, যা ব্যয়বহুল হতে পারে। তাই অতিরিক্ত চিকিৎসা খরচ ও কষ্ট এড়াতে দ্রুত কোমর ব্যথার চিকিৎসা করান।
0 Comments