দুশ্চিন্তা ও অস্থিরতায়
কর্মব্যস্ত জীবনে দুশ্চিন্তা আমাদের নিত্যসঙ্গী হয়ে উঠেছে। আমরা যে মানসিক চাপের মধ্যে আছি, তা আমরা নিজেরাই অনেক সময় বুঝতে পারছি না। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে হতে পারে মারাত্মক সব স্বাস্থ্য সমস্যা। আর তাই মানসিক চাপের লক্ষণগুলো চিনে নেয়া খুব জরুরি। মানসিক চাপের লক্ষণ দুশ্চিন্তা যে আপনার মনে ঘর করছে, তা হয়তো আপনি টেরও পাচ্ছেন না। কিন্তু আপনার দেহ তা ঠিকই বুঝতে পারবে এবং আপনাকে ইঙ্গিতও দেবে।
১. নিয়মিত মাথা ব্যথা মাথা ব্যথা কালে ভদ্রে হতেই পারে, কিন্তু যদি প্রতিদিনের নিয়ম করে মাথা ব্যথা তখন বুঝবেন এটি স্বাভাবিক নয়। মানসিক চাপে থাকলে অনেকের মাইগ্রেনের ব্যথা চলতে পারে টানা অনেক দিন।
২. ঘুমের ব্যাঘাত দুশ্চিন্তা করলে স্বাভাবিক ঘুম হয় না। হয়তো অনেক রাতে শুতে গেছেন, ঘুম হল ছাড়া ছাড়া। ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই পালালো সেইটুকু ঘুমও। আর দীর্ঘদিন ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা মানে অসুখ ডেকে আনা।
৩. শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হঠাৎ করে শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া কিংবা কোনো কারণ ছাড়াই আতঙ্ক গ্রাস করা (প্যানিক অ্যাটাক) মানসিক চাপের অন্যতম লক্ষণ।
৪. চামড়ার সমস্যা টেনশন থেকে মুখে ব্রণ হওয়া অনেকের জন্যেই সাধারণ ঘটনা। ব্রণ ছাড়াও চামড়ার বিভিন্ন অসুখ যেমন একজিমা, সোরিয়াসিস মানসিক চাপের কারণে হটাৎ বেড়ে যেতে পারে।
৫. বুকে ব্যথা অনেকের মানসিক চাপ থেকে বুকে ব্যথা শুরু হয়, হৃৎস্পন্দন বেড়ে যায়।
৬. বুকে জ্বালাপোড়া ও হজমে সমস্যা মানসিক চাপে অনেকেরই অ্যাসিডিটি বেড়ে যায়, ফলে বুকে জ্বালাপোড়া দেখা দেয়। কারও কারও ক্ষেত্রে হজমে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৭. কাশি দুশ্চিন্তা থেকে লাগাতার খুসখুসে কাশি হয় অনেকের, কারও আবার মুখের ভেতর ঘা হয়।
৮. হাড়ে ব্যাথা হাড়ের সংযোগস্থলে দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা, পেশি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং শরীর ব্যথাও হতে পারে মানসিক চাপের কারণে। তাহলে কি করবেন?
✧ প্রিয়জনের সঙ্গে আপনার দুশ্চিন্তা ভাগ করে নিন। কোনো কিছু নিয়ে খুব মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে তা একা একা সহ্য করবেন না! কোনো সমাধানের পথ না পেলেও একটু হালকা লাগবে ঠিকই।
✧ মাথার ওপর কাজের পাহাড় জমে আছে? সব নিজে নিজে না করে সাহায্য নিন সহকর্মী কিংবা পরিবারের কোনো সদস্যের। দরকার হলে তাকে বুঝিয়ে দিন কাজের ধরন, তাও নিজেকে একটু রেহাই দিন।
✧ নিজের জন্য সময় বের করুন। কাজ তো থাকবেই, তার মাঝে নিজেকে ভুলে গেলে কি চলবে? প্রতিদিন নিজের জন্য একটু সময় বের করে, সে সময়টুকু পছন্দের কোনো কাজ করে ব্যয় করুন। দেখতে পারেন প্রিয় কোনো অনুষ্ঠান, পড়তে পারেন কোনো বই, কিংবা গল্প-আড্ডায় কাটিয়ে দিন সময়টুকু। তবে মনে রাখবেন, এই সময়ে কাজের কথা ভাবা যাবে না একদম।
✧ নিয়মিত ব্যায়াম করুন। যোগব্যায়াম কিংবা যেকোনো ধরনের ব্যায়াম আপনাকে যেমন রাখবে সুস্থ, তেমনই মনকে রাখবে প্রাণবন্ত।
✧ বেড়িয়ে আসুন কাছে পিঠে কোথাও। সারা সপ্তাহ কাজ লেগেই থাকে, মাঝে একটি দিন যদি ছুটি পান তাহলে তা আলসেমি করে নষ্ট করবেন না। জোর করে হলেও ভ্রমণ করুন। বেশি দূরে নয়, কাছাকাছি কোথাও লং ড্রাইভে চলে যান। সত্যি বলছি, আপনি ঠকবেন না!
✧ নিজের শখ পূরণ করুন। হয়ত এক সময় ভালো গিটার বাজাতেন কিংবা ছবি আঁকতেন। সময় পেলেই ঢুকে পড়ুন সেই শখের জগতে। খেয়াল রাখবেন, শখ বলতে কিন্তু শপিং করা কিংবা পেট পুরে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার কথা বলা হয়নি। মনে রাখা চাই মানসিক চাপ সব বয়সী মানুষের হতে পারে। এমনকি স্কুলের হোমওয়ার্কের বোঝাও হতে পারে কোনো শিশুর জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। যদি আপনার পরিবারের কোনো সদস্য দুশ্চিন্তায় থাকে, তাকে সাহায্য করুন। নাহলে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্যঝুকির শিকার হতে পারেন তিনি।
চিকিৎসায় অজ্ঞতা, অসচেতনতা আর কুসংস্কারের ফলে মানসিক রোগ বলে কোনো কিছুর অস্তিত্বই স্বীকার করতে চান না অনেকে। গায়েবি আওয়াজ শোনা, ভ্রান্ত কিন্তু দৃঢ় বিশ্বাস, অহেতুক সন্দেহ, আচার-আচরণ বা কথাবার্তার অস্বাভাবিক পরিবর্তন, কনভার্সন ডিসঅর্ডার (যা হিস্টিরিয়া বা মূর্ছারোগ নামেই বেশি পরিচিত)-এর উপসর্গগুলোকে জিন-ভূতের আছর, জাদু-টোনা- তাবিজ-আলগা বাতাসের প্রভাব বলেই বিশ্বাস করেন অনেকে।
আত্মীয়স্বজন এসব সমস্যায় আক্রান্ত হলে তারা চিকিৎসাও করান তেল-পড়া, পানি-পড়া, তাবিজ, ঝাড়-ফুঁক, ‘শিকল থেরাপি’ ইত্যাদির মাধ্যমে। অনেকের কাছে মানসিক রোগের উপসর্গগুলো বয়সের দোষ, বিয়ের জন্য টালবাহানা, ঢং বা ভং ধরা। চিকিৎসার ব্যাপারে এদের বিশ্বাস- ‘মাইরের উপর ওষুধ নাই।’ কখনো কখনো শারীরিক উপসর্গ যে মানসিক রোগের কারণে হতে পারে- তাও অনেকে মানতে চান না। ফলে, মানসিক সমস্যার প্রতি গুরুত্ব না দিয়ে শারীরিক উপসর্গ নিয়েই ব্যতিব্যস্ত থাকেন তারা।
এতসব কুসংস্কার ও অজ্ঞতার বেড়াজাল ডিঙিয়ে যারা মানসিক রোগ চিকিৎসার আওতায় আসেন, তাদেরও বড় একটা অংশ ওষুধ নিয়ে নানান বিভ্রান্তিতে সঠিক চিকিৎসা করান না। পঞ্চাশের দশকের শুরুর দিকে মানসিক রোগ চিকিৎসার আধুনিক ওষুধ আবিষ্কৃত হয়। এর পর সময়ের গতির সঙ্গে মানসিক রোগ চিকিৎসারও অগ্রগতি সাধিত হয়, আবিষ্কৃত হয় নতুন নতুন ওষুধ, সেসব ওষুধের সফল প্রয়োগ মানসিক রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখে। কিন্তু আমাদের দেশে মানসিক রোগের ওষুধ সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো বিদ্যমান।
মানসিক রোগের ওষুধের ক্ষেত্রে একটি ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে, এগুলো খেলে ব্রেনের ক্ষতি হয়, ব্রেন নষ্ট হয়ে যায়, মস্তিষ্ক আর কখনোই স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে না ইত্যাদি। অনেকের ধারণা, এসব ওষুধ শুধু ঘুম পাড়ায়, আর কোনো কাজে আসে না। সার্বিকভাবে আমাদের দেশ ওষুধ সংক্রান্ত গবেষণা ও নতুন ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কোনো নাম নয়। উন্নত বিশ্বে, যেখানে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন ওষুধ আবিষ্কার ও এর কার্যকারিতা পরীক্ষা হচ্ছে, সেখানকার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ওষুধ বাজারজাতকরণের অনুমতি প্রদান করে। যে কোনো রোগের চিকিৎসায় নতুন কোনো ওষুধ আবিষ্কৃত হলে তা নির্ধারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে মানবদেহে তা কতটা কার্যকর ও নিরাপদ তা পরীক্ষা করার পরই কেবল কার্যকারিতা ও মানবদেহের নিরাপত্তা বিবেচনায় তা বাজারজাতকরণের অনুমতি দেয়া হয়। তারপরও অব্যাহত থাকে ওই ওষুধ নিয়ে গবেষণা। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেখানে নতুন ওষুধ কার্যকর হলেও মানবদেহে এর ক্ষতিকর প্রভাব উপকারের তুলনায় বেশি হওয়ায় বাজারে আর আসেনি। উন্নত বিশ্বে এভাবে অনুমতিপ্রাপ্ত ওষুধই উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশগুলোতেও, যারা গবেষণায় পিছিয়ে, ব্যবহৃত হয়। অন্য যে কোনো ওষুধের মতো মানসিক রোগ চিকিৎসার ওষুধের ক্ষেত্রেও একই ধারা অনুসরণ করা হয়। নির্ধারিত গবেষণার ফলাফল সন্তোষজনক হওয়ার পরই এসব ওষুধ চিকিৎসায় ব্যবহারের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত হয়েছে।
তবে, এ কথা বলা হচ্ছে না যে, মানসিক রোগের ওষুধের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। আবিষ্কৃত কোনো কার্যকর ওষুধই শতভাগ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মুক্ত নয়। এমনকি আমরা নিয়মিতই মুড়িমুড়কির মতো যে প্যারাসিটামল আর গ্যাসের ওষুধ (অ্যান্টিআলসারেন্ট) খেয়ে থাকি, সেগুলোও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন নয়। মনে রাখতে হবে, একটি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সব সেবনকারী আক্রান্ত হন না। কোনো কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নগণ্য সংখ্যকের হতে পারে।
কিছু সাধারণ, সহনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে অনেক সেবনকারীর। কিন্তু এইসব প্রতিক্রিয়ার তুলনায় এসব ওষুধের কার্যকর প্রভাবের হার বেশি হওয়ায় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কাটুকু চিকিৎসাবিজ্ঞানে ‘গ্রহণযোগ্য’ বলেই ধরা হয়। মানসিক রোগের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কেও একই কথা প্রযোজ্য। কিন্তু সাধারণভাবে মানসিক রোগ ও এর ওষুধ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক হওয়ায় না জেনেই অনেকে এসব ওষুধ সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে থাকেন।
অনেকে গবেষণালব্ধ ফল সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলেও কেন যেন তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেন না। অবাক ব্যাপার হচ্ছে, উন্নত বিশ্বের কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শারীরিক ওষুধ সম্পর্কিত গবেষণালব্ধ ইতিবাচক ফলাফল যারা সাদরে গ্রহণ করছেন, কুসংস্কার আর নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে তারাই আবার একই স্থান থেকে একই গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণে প্রাপ্ত মানসিক রোগের ওষুধ সম্পর্কিত গবেষণার ফলাফলে আস্থা রাখছেন না- এমন উদাহরণ বিরল নয়।
মানসিক রোগের ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে সেবনের উপদেশ মেনে চলতে অনেকে দ্বিধাবোধ করেন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ প্রভৃতির ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে এবং অনেক ক্ষেত্রে আজীবন ওষুধ খাবার জন্য রোগীরা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। মৃগীরোগ, বাতজ্বর প্রভৃতি রোগেও কয়েক বছর ওষুধ খাবারের ব্যাপারটিও এখন রোগীরা স্বাভাবিকভাবেই গ্রহণ করছেন। বিভিন্ন মাধ্যম ও পর্যায়ে দীর্ঘদিনের প্রচারণা, তথ্য সরবরাহ ও শিক্ষার কারণেই এসব রোগের চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যাপারে সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ইতিবাচক।
কিন্তু মানসিক রোগে ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে সেবনের ব্যাপারে সমাজের সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি এখনো নেতিবাচক। কিছুদিন ওষুধ খাওয়ার পর রোগী যখন ভালো বোধ করেন বা উপসর্গ কমে যায়, তখন রোগী বা তার আত্মীয়স্বজন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই ওষুধ খাওয়ানো বন্ধ করে দেন। ফলে, রোগীর সঠিক চিকিৎসা হয় না। এবং কিছুদিন পর রোগীর উপসর্গ আবার ফিরে আসে। সঠিক প্রচারণা ও কার্যকর তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমেই এই দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সম্ভব।
অনেকের ধারণা, মানসিক রোগের ওষুধ মাত্রেই আসক্তি (অ্যাডিকশন) তৈরি করে, একবার রোগী ওষুধ খাওয়া শুরু করলে আর ছাড়তে পারে না। বাস্তবতা হচ্ছে, বেনজোডায়াজেপিন গ্রুপের ওষুধ (ডায়াজিপাম, ক্লোনাজিপাম, অ্যালপ্রাজোলাম প্রভৃতি- অনিদ্রা ও উদ্বেগজনিত সমস্যার জন্য যা ব্যবহৃত হয়) টানা দীর্ঘদিন খেলে আসক্তির সমস্যা দেখা দেয়। বিষণাতারোধী (অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট) বা জটিল মানসিক রোগে ব্যবহৃত ওষুধে (অ্যান্টিসাইকোটিক) আসক্তির সমস্যার কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক প্রমাণ নেই।
মানসিক রোগের ওষুধ নিয়ে ভ্রান্ত ধারণার বশবর্তী অনেকে আবার ওষুধ ছাড়া শুধু সাইকোথেরাপি অথবা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে দেয়ার দাবি জানান। মানসিক রোগের ধরন অনুযায়ী ওষুধ, সাইকোথেরাপি ও অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো রোগের জন্য কোনো ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, তার গবেষণাভিত্তিক দিক নির্দেশনা রয়েছে।
কিছু রোগের চিকিৎসায় যেমন সাইকোথেরাপিই প্রথম পছন্দ, আবার সিজোফ্রেনিয়া, ম্যানিয়া, তীব্র বিষণাতাসহ আরো কিছু রোগে ওষুধ অপরিহার্য। মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ রোগীর রোগ নির্ণয় করে তার জন্য কোনো ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে, সে পরামর্শ দেবেন। মানসিক সমস্যা হলেই যে সঙ্গে সঙ্গে ওষুধ খাওয়া শুরু করতে হবে, সেটা যেমন ঠিক নয়- তেমনি সব মানসিক রোগ ওষুধ ছাড়াই ভালো করা যাবে- তাও সত্য নয়। মানসিক রোগের ওষুধ শুরুও করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে, বন্ধও করতে হবে তার পরামর্শমতো।
0 Comments